বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন

খুলনার করোনা হাসপাতাল চত্বরেই রোগীর স্বজনদের ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিক্ষা!

এস.এম. সাঈদুর রহমান সোহেল, খুলনা ব্যুরো::

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় আপনজন চিকিৎসাধীন। আর নিচে গাড়ীর গ্যারেজের শেডের তলায় অপেক্ষা করছেন স্বজনরা। কিন্তু চরম ঝুঁকির মধ্যেই। এখানে নেই কোন স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা। এ চিত্র খুলনায় করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত নগরীর বয়রাস্থ ডায়বেটিক হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ডেলিকেডেট হাসপাতাল চত্বরের।

করোনা হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, চত্বরের দেয়াল বেষ্টিত গাড়ীর গ্যারেজে রোগীদের ২৫-২৫জন স্বজন অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মেঝেতে পাটি বিছিয়ে অবস্থান করছেন। কেউ কেউ ক্লান্ত শরীরে কিছুটা শুয়ে বিশ্রামও নিচ্ছেন। এমনকি অনেকেই অতি জরুরি মাস্কও ব্যবহার করছেন না। অথচ: সেখানে প্রতিনিয়তই করোনা রোগীদের আনা-নেওয়া এবং তাদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের যাতায়াত রয়েছে।

এদিকে জনৈক রোগীর স্বজন হাসপাতাল চত্বরে স্বজনদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে পোষ্ট করলে তাতে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য করেন অনেকেই।

নূরুল হুদা শেখ নামে রোগীর ওই স্বজন তার পোষ্টে ছবি দিয়ে উল্লেখ করেন, ‘নুরনগর, বয়রা, খুলনা (নতুন ডায়াবেটিস হাসপাতাল) করোনা ক্যাম্পের বাইরে, বাউন্ডারির ভিতরে, হৃদয়ের ব্যাকুলতায়, মায়ার বাঁধনে স্বজনদের ঝুঁকিপূর্ণ দীর্ঘ প্রতীক্ষা।’

এতে মন্তব্য করে একে আজাদ পান্না নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, ‘কি আর করা ঝুঁকিপূর্ণ বলতে আর কিছু থাকল না যখন, তখন এ ভাবেই চলতে হবে।’ বাপ্পি খাঁন নামে একজন সিনিয়র ফটো সাংবাদিক মন্তব্য করতে গিয়ে উল্লেখ করেন, ‘এরমধ্যেও স্বজনদের মুখে মাস্ক নাই, ঝুঁকি বেড়ে গেল না।’

চিকিৎসাধীন জনৈক রোগীর স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রোগীর কাছে তো থাকার কোন সুযোগ নেই। আবার রেখেও যেতে পারছি না। থাকারও কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে বাধ্য হয়েই এখানে বিছানা পেতে কোন রকমে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করে খুমেক হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. মুন্সি রেজা সেকেন্দার এ প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। কিন্তু রোগীর স্বজনদের নিষেধ করা সত্বেও তারা মানছে না। এমনকি তারা কোন ধরণের মাস্ক বা পিপিই ছাড়াই হাসপাতালের মধ্যেও ঢুকে যায়। এতে করে তারাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অনেকেই এভাবে আক্রান্তও হচ্ছে। এ বিষয়ে সার্বক্ষনিক হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন রাখতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, করোনা হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৮০জন করে রোগী ভর্তি থাকছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com